আলফ্রেড নোবেলের জীবনী: মৃত্যুবার্তা থেকে অনুপ্রেরণা
আলফ্রেড নোবেল ছিলেন এক অসাধারণ বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও উদ্ভাবক, যিনি ডিনামাইট আবিষ্কার করেছিলেন। তবে তার জীবনের এক অদ্ভুত ঘটনা তাকে নোবেল পুরস্কার প্রচলন করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
—
প্রারম্ভিক জীবন
আলফ্রেড নোবেল ১৮৩৩ সালে সুইডেনের স্টকহোম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন প্রকৌশলী, যিনি বিস্ফোরক নিয়ে গবেষণা করতেন। ছোটবেলা থেকেই আলফ্রেড বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।
তিনি রসায়ন ও প্রকৌশলে দক্ষ হয়ে ওঠেন এবং বিস্ফোরকের উন্নতিতে কাজ করতে শুরু করেন।
—
ডিনামাইটের আবিষ্কার
নোবেল ১৮৬৭ সালে ডিনামাইট আবিষ্কার করেন, যা নির্মাণকাজ ও খনির কাজে বিপ্লব এনেছিল। এটি বিস্ফোরক শিল্পে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিল, কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে।
এই কারণে অনেক মানুষ তার সমালোচনা করেছিল এবং তাকে “মৃত্যুর ব্যবসায়ী” (Merchant of Death) বলা হতো।
—
ভুল মৃত্যুবার্তা: আত্মজীবন পরিবর্তনের মুহূর্ত
১৮৮৮ সালে এক আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে। আলফ্রেড নোবেলের ভাই লুডভিগ নোবেল মারা যান। কিন্তু এক ফরাসি পত্রিকা ভুল করে আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করে, যেখানে লেখা হয়েছিল:
“মৃত্যুর ব্যবসায়ী মারা গেছেন। তিনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি ধ্বংসের অস্ত্র তৈরি করে বিশাল সম্পদ গড়েছেন।”
এই খবর পড়ে নোবেল খুব কষ্ট পেলেন। তিনি ভাবলেন, “আমি যদি আজ সত্যি মারা যেতাম, তাহলে মানুষ আমাকে ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে মনে রাখত। আমি কী এই ভাবেই স্মরণীয় হতে চাই?”
এই চিন্তা তাকে বদলে দেয়। তিনি তার সম্পত্তি মানবতার কল্যাণে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন।
—
নোবেল পুরস্কারের প্রচলন
১৮৯৫ সালে তিনি তার ৯৪% সম্পত্তি দিয়ে একটি তহবিল গঠন করেন, যা থেকে প্রতি বছর পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য এবং শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হবে। পরবর্তীতে অর্থনীতির জন্যও এই পুরস্কার চালু হয়।
১৮৯৬ সালে তিনি মারা যান, এবং ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।
—
শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা অর্থ ও খ্যাতি আসল সাফল্য নয়, বরং মানুষ তোমাকে কীভাবে মনে রাখবে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে পরিবর্তন করা যায়।
বিজ্ঞানের শক্তি ভালো ও খারাপ দুইভাবেই ব্যবহার করা যায় – আমাদের উচিত এটি ভালো কিছুর জন্য কাজে লাগানো।
—
আলফ্রেড নোবেলের বিখ্যাত উক্তি
“আমি চাই, আমার মৃত্যুর পর পৃথিবী আমাকে যুদ্ধের ধ্বংসের জন্য নয়, শান্তির জন্য মনে রাখুক।”
এই গল্প শিক্ষার্থীদের শিখাবে যে সত্যিকারের সাফল্য হলো এমন কিছু করা, যা মানবতার উপকারে আসে।
আপনি যদি আরও অনুপ্রেরণামূলক জীবনী চান, তাহলে বলতে পারেন!
